৫শ বছর আগে ঘটা দুই নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষের ছবি মিললো
দুটি তরুণ নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভয়াবহ বিস্ফোরণের ছবি ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ওরিয়ন নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে অবস্থিত তারকা দুটির এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল আজ থেকে না হলেও ৫০০ বছর আগে।
বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই ধুলি এবং গ্যাসের মেঘে ওই নক্ষত্রপুঞ্জ এলাকা ছেয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নক্ষত্রদ্বয়ের সংঘর্ষে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তা আমাদের সূর্য একশ কোটি বছর ধরে যে শক্তি বিকিরণ করতে পারতো তার সমান।
এ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন অ্যাস্ট্রফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
মহাবিশ্বে এ ধরনের বৃহৎ বিস্ফোরণগুলো সাধারণত সুপারনোভার সাথে সংশ্লিষ্ট। বিশেষ করে অনেক পুরনো ও বড় আকারের নক্ষত্রগুলোর যখন মৃত্যুদশা তখন এ ধরনের বিস্ফোরণ লক্ষ্য করা যায়।
ফলে নতুন এই ছবিটি নক্ষত্রপুঞ্জের জীবনচক্র সম্পর্কে নতুন ধারণার জন্ম দিল।
বিশাল আকৃতির গ্যাসীয় মেঘ যখন নিজের মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবে নিজের উপর চুপসে যেতে থাকে তখনই নক্ষত্রের জন্ম হয়। পৃথিবী গ্রহ থেকে দেড় হাজার আলোকবর্ষ দূরে ওরিয়ন মলিকুলার ক্লাউড ১ (ওএমসি-১) নামের একটি অঞ্চলে অনেক কম বয়সী কিছু নক্ষত্রের জন্মপ্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রায় পাঁচশ বছর আগে পর্যন্ত মহাকর্ষ বল এই প্রাথমিক কালের নক্ষত্রগুলোকে আরো দ্রুততর গতিতে পরস্পরের কাছাকাটি টেনে আনে। এর মধ্যে থেকেই দুটিতে ঘর্ষণ অথবা মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় এবং একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এর ফলে গ্যাস ও ধুলিকণাগুলো প্রতি সেকেন্ডে দেড়শ কিলোমিটারের বেশি বেগে মহাশূন্যে ছুটতে থাকে।
২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম এ ধরনের বিস্ফোরণের চিহ্ন পান। এখন চিলির উত্তরাঞ্চলে আটাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে (আলমা) ব্যবহার করে ওই বিস্ফোরণের হাইরেজলুশন ছবি ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এই ছবি তোলা হয় গত বছরের ৪ জুলাই।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই বিরল দৃশ্য ধারণ করতে সক্ষম হন।
এর মাধ্যমে তারা বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট গ্যাস ও ধুলিকণার স্রোতটির গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাচ্ছেন। এই বিশাল গ্যাসীয় প্রবাহের মধ্যে উচ্চগতির কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের চলন এবং বিস্তার সম্পর্কে গবেষণা করছেন। এটি নক্ষত্রের জন্মপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বুঝতে সহায়তা করবে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ ধরনের বিস্ফোরণের জীবনকাল খুব কম হওয়ার কথা। আলমাতে যেসব ধুলিকণা দেখে গেছে সেগুলো কয়েক শতক পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক প্রফেসর জন ব্যালি বলেন, এই ধরনের বিস্ফোরণ সম্পর্কে আলমা আমাদের নতুন ধারণা দিচ্ছে। এটি তারকাপুঞ্জের জীবনচক্র এবং নক্ষত্রের জন্ম সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে।
সূত্র: বিবিসি
www.blogkori.tk
No comments:
Post a Comment